<p><strong>হাকালুকি হাওর</strong>&nbsp;বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ&nbsp;হাওর। এটি এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম মিঠাপানির জলাভূমি। এর আয়তন ১৮,১১৫ হেক্টর, তন্মধ্যে শুধুমাত্র বিলের আয়তন ৪,৪০০ হেক্টর। এটি&nbsp;মৌলভীবাজার জেলার়&nbsp;বড়লেখা&nbsp;(৪০%),&nbsp;কুলাউড়া&nbsp;(৩০%), এবং&nbsp;সিলেট জেলার়&nbsp;ফেঞ্চুগঞ্জ&nbsp;(১৫%),&nbsp;গোলাপগঞ্জ&nbsp;(১০%) এবং&nbsp;বিয়ানীবাজার&nbsp;(৫%) জুড়ে বিস্তৃত। ভূতাত্ত্বিকভাবে এর অবস্থান, উত্তরে&nbsp;ভারতের&nbsp;মেঘালয়&nbsp;পাহাড় এবং পূর্বে&nbsp;ত্রিপুরা&nbsp;পাহাড়ের পাদদেশে। ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যের কারণে উজানে প্রচুর পাহাড় থাকায় হাকালুকি হাওরে প্রায় প্রতি বছরই আকস্মিক বন্যা হয়। এই হাওরে ৮০-৯০টি ছোট, বড় ও মাঝারি বিল রয়েছে। শীতকালে এসব বিলকে ঘিরে পরিযায়ী পাখিদের বিচরণে মুখর হয়ে উঠে গোটা এলাকা। অতিথি পাখি দেখতে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস হচ্ছে হাকালুকি হাওর ভ্রমণের আদর্শ সময়। এ সময় হাওরের চারপাশ অতিথি পাখির কোলাহলে মুখর হয়ে থাকে।বহু বছর আগে&nbsp;ত্রিপুরার&nbsp;মহারাজা ওমর মানিক্যের সেনাবাহিনীর ভয়ে&nbsp;বড়লেখার&nbsp;কুকি দলপতি হাঙ্গর সিং জঙ্গলপূর্ণ ও কর্দমাক্ত এক বিস্তীর্ণ এলাকায় এমনভাবে&nbsp;<em>লুকি</em>&nbsp;দেয় বা লুকিয়ে যায় যে, কালক্রমে ঐ এলাকার নাম হয় &quot;হাঙ্গর লুকি&quot;, ধীরে ধীরে তা &quot;হাকালুকি&quot;-তে পর্যবসিত হয়। আরেকটি জনশ্রুতি অনুযায়ী প্রায় দুই হাজার বছর আগে প্রচন্ড এক ভূমিকম্পে &quot;আকা&quot; নামে এক রাজা ও তাঁর রাজত্ব মাটির নিচে সম্পূর্ণ তলিয়ে যায়। কালক্রমে এই তলিয়ে যাওয়া নিম্নভূমির নাম হয় &quot;আকালুকি&quot; বা হাকালুকি। আরও প্রচলিত যে, এক সময় বড়লেখা থানার পশ্চিমাংশে &quot;হেংকেল&quot; নামে একটি উপজাতি বাস করতো। পরবর্তিতে এই &quot;হেংকেলুকি&quot; হাকালুকি নাম ধারণ করে। এও প্রচলিত যে, হাকালুকি হাওরের কাছাকাছি একসময় বাস করতো কুকি, নাগা উপজাতিরা। তাঁদের নিজস্ব উপজাতীয় ভাষায় এই হাওরের নামকরণ করা হয় &quot;হাকালুকি&quot;, যার অর্থ &#39;লুকানো সম্পদ&#39;।হাকালুকি হাওড় বিভিন্ন মৌসুমে বিভিন্ন রূপ ধারণ করে। বর্ষাকালে এই হাওড়টি একটি অথৈ সাগরে পরিনত হয়। আবার শীতকালে এই হাওড়ের রূপ হয় অন্যরকম। পুরো হাওরই দেখার মতো। সমুদ্রের মতো বিশাল ঢেউ, চারদিকে পানি আর পানি।মাধবকুন্ড প্রাকৃতিক ঝর্ণা, গগণটিলা ও পার্শ্ববর্তী বনাঞ্চল, হাইল হাওর, চা ও রাবার বাগান এবং শ্রমিকদের সংস্কৃতি ও জীবনধারা লাউয়াছড়া ও সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান এবং রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, খাসিয়া ও মনিপুরী সংস্কৃতি ও জীবনধারা পানপুঞ্জি, টিলা ও প্রাকৃতিক দৃশ্য, প্রাকৃতিক বন ও বন্যপ্রাণী।</p>