<h1>সাদা পাথর</h1> <p>যতদূর চোখ যায় দুইদিকে কেবল সাদা পাথর, মাঝখানে স্বচ্ছ নীল জল আর পাহাড়ে মেঘের আলিঙ্গন। যেন অপরূপ এক স্বর্গরাজ্য। সব মিলিয়ে অদ্ভুত এক সৌন্দর্যের ক্যানভাস। বলা হচ্ছে, সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর পর্যটনকেন্দ্রের কথা। সিলেট নগরী থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরত্বে সীমান্তবর্তী উপজেলা কোম্পানীগঞ্জ। সিলেটে পাথরের স্বর্গরাজ্য হিসেবে খ্যাত ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারির জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন নতুন পর্যটন স্পট হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে ‘সাদা পাথর’ নামক স্থানটি। এখানে বর্ষণস্নাত প্রকৃতি যেন সেজে ওঠে সবুজের আচ্ছাদনে। অবশ্য সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ সড়কে উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় পর্যটকদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। রাস্তার বেহাল অবস্থার মধ্যেও সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পর্যটকদের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্র।ভোলাগঞ্জ কোয়ারির জিরো পয়েন্টের ওপারে উঁচু পাহাড়ে ঘেরা সবুজের মায়াজাল। সেখান থেকে নেমে আসা ঝরনার অশান্ত শীতল পানির অস্থির বেগে বয়ে চলা, গন্তব্য ধলাই নদীর বুক, প্রকৃতি যেন নিজ হাতে সাজিয়েছে। স্বচ্ছ নীল জল আর পাহাড়ের সবুজ মিলেমিশে একাকার। নদীর বুকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা পাথরের বিছানা নদীটির শোভা বাড়িয়ে দিয়েছে হাজারগুণ। সাদা পাথরের ওপর দিয়ে বয়ে চলা ঝরনার পানির তীব্র স্রোতে নয়ন জুড়ায় আর শীতল জলের স্পর্শে প্রাণ জুড়িয়ে যায় নিমিষেই। শহুরে যান্ত্রিকতা থেকে মুক্তি পেতে সারা দেশ থেকেই ছুটে আসেন পর্যটকরা। পথে যেতে দূর থেকেই পাহাড়ের সৌন্দর্য মন কাড়বে আপনার। মন চাইবে দুই হাতে জড়িয়ে প্রকৃতির এই সৌন্দর্যকে আলিঙ্গন করতে।সাদা পাথর পর্যটন স্পট ছবিতে অনেকটা বিছনাকান্দির মতো দেখতে মনে হলেও সামনাসামনি দেখলে পার্থক্যটা ধরা পড়বে। পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ হওয়ায় এখনো পুরোটাই প্রাকৃতিক এই স্থানটি। পাথরের ওপর দিয়ে প্রবল বেগে বয়ে চলা ধলাইর কলকল শব্দে পাগল করা ছন্দ। সিলেট থেকে সাদা পাথর পর্যন্ত পুরোটা পথই প্রকৃতি তার সৌন্দর্যে বিমোহিত করবে যে কাউকে। সিলেট নগরীর সীমানা ছাড়ালেই লাক্কাতুরা চা বাগান। সারি সারি চায়ের গাছ দেখতে দেখতেই যাবেন অনেকটা পথ। বাংলাদেশের প্রথম চা বাগান এটি। চা বাগানের সীমানা পেরিয়ে আরো খানিকটা এগুলে সালুটিকর বাজার, কোম্পানীগঞ্জের সীমানা শুরু। বাজার পেরুলেই একদিকে সবুজ ধানক্ষেত আর অন্যদিকে বিশাল জলাভূমি। নীল আকাশের প্রতিচ্ছবিতে জলাভূমির পুরোটাই আকাশ মনে হয়, দেখে মনে হয় জলের বুকে ভেসে বেড়াচ্ছে মেঘ। আকাশ আর জলের খেলা দেখতে দেখতেই কোম্পানীগঞ্জের টুকের বাজার। সেখান থেকে ট্রলারে আধাঘণ্টার ভোলাগঞ্জ জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন সাদা পাথর পর্যটন স্পট।ভারত থেকে নেমে আসা সীমান্ত নদী ধলাই নদীর জিরো পয়েন্ট এলাকা স্থানীয়ভাবে ‘সাদা পাথর’ এলাকা হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি জায়গাটি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত এলাকাটি দেখতে প্রতিদিনই পর্যটকরা সেখানে ভিড় করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভারতের খাসিয়া জৈন্তিয়া পাহাড় থেকে নেমে আসা ধলাই নদীর পানির সঙ্গে প্রতিবছর বর্ষাকালে নেমে আসে প্রচুর পাথর। ধলাই নদীর তলদেশেও রয়েছে পাথরের বিপুল মজুদ।</p> <p> </p>